হেনা সুলতানা,
 
নেহায়েত সময়টা খারাপ নইলে কত দর্শনার্থী যে কুমুদিনীতে আসত ফুলের সৌন্দর্যের মায়া জালে আচ্ছন্ন হতে! চারদিকে সবুজ প্রকৃতি তার ভিতর কিছু গাছ গুচ্ছ গুচ্ছ শাদা ফুল ফুটিয়ে জানান দিচ্ছে - যে আমি। কে তুমি? আমি কুরচি! মৃদু মন্দ বসন্ত বাতাসে ঝরে পড়ছে ফুলের পাপড়ি। চারপাশে হালকা মিষ্টি সৌরভে মন কেমন করে। মন কেমন করেছিল বলেই তো মহাকবি কালিদাস কুরচির বন্দনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহ থেকে কলকাতা যাচ্ছিলেন সে সময়েই কুরচির দেখা পান। সে ফুল দেখে কবিতা লিখলেন বৈশাখে (১৩৩৪) কবিতার নাম কুরচি। কবির মতে কুরচি গাছ ফুলের ঐশ্বর্যে মহিমান্বিত। কবি পুনশ্চ, শ্যামলী, বনবাণী আকাশ প্রদীপের অনেক জায়গায় কুরচির সৌন্দর্যের কথা লিখেছেন প্রাণ খুলে। কুরচি মাঝারি আকারের পর্নমুচী বৃক্ষ। শীতের শেষে বড় বড় সবুজ পাতা ঝরে গেলেই বসন্তের শেষে গ্রীষ্মের শুরুতে ফুলে ফুলে তাক লাগিয়ে দেয়। এসময় ফুলের সাথে কচি পাতা দেখা যায়। পাঁচ পাপড়ির ফুল। বীজ শিকড় থেকে গজানো চারার মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার। সেপ্টেম্বর অক্টোবরে এগাছে আরও একবার ফুল ফোটে। এর ফুল বাকল থেকে পাওয়া যায় নানা রোগের অসুধ। আসামে কুরচি কাঠের কবজ ব্যবহার করার প্রচলন আছে। আমাদের দেশে নানা জায়গায় ফুল দেখা যায়। ফুলের অনেক নাম আছে, যেমন হিন্দ নাম কুটাজ বা কুটাজা,সংস্কিৃত নাম ভাটসাক, তবে রবীন্দ্রনাথ এর নাম রেখেছেন গিরিমল্লিকা। আদি নিবাস ভারত।
আয়ুর্বেদে কুরচির বীজ ও বাকল (ছাল) চিকিতসার জন্য ব্যবহার হয় । উভয়েরিই অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টিডায়ারিয়াল প্রভাব আছে । এছাড়াও অনেক রোগের চিকিতসার কাজে এই গাছ বহু মূল্যবান,বাংলাদেশে খুব অল্প যায়গায় কুরচির দেখা মেলে । এটা সংরক্ষনের দাবি রাখে ।










2 تعليقات

  1. বাহ ! দারুন লেখা। তথ্য ও কাব্যময়তার যুঁথতা যেনো!...

    ردحذف
  2. এই সঙ্কটময় অবস্থায় একটু স্বস্তি । ধন্যবাদ

    ردحذف

إرسال تعليق

أحدث أقدم